এশিয়ান ভিউজ

Creating new perspectives…

চুক্তিটিকে ‘ব্রেকথ্রু ডকুমেন্ট’ বলে অভিহিত করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : রয়টার্স

‘আগ্নেয়’ বন্ধুত্বে পুতিন-কিম

এশিয়ান ভিউজ ডেস্ক

বিপদে পাশে দাঁড়ানোর চুক্তিতে ‘আগ্নেয়’ বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উন। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিম। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন । বুধবার পিয়ংইয়ংয়ে দুই নেতার বৈঠক হয়।

বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে একটি চুক্তিতে সই হয়। উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম কেসিএনএ এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড। প্রতিবেদনের চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কোনো একটি আক্রান্ত হলে বা যুদ্ধ পরিস্থিতি এলে যে কোনো মূল্যে একে অপরকে সাহায্য করবে তারা। প্রয়োজনে সামরিক শক্তিও প্রয়োগ করা হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার পার্বত্য অঞ্চল রাশিয়ার জন্য জরুরি। চুক্তি অনুযায়ী এই অঞ্চল ব্যবহার করবে মস্কো। বিনিময়ে কিমের পারমানবিক অস্ত্র ও মিসাইল উন্নত করতে আর্থিক সহায়তা ও আধুনিক প্রযুক্তি দেবে রাশিয়া।

এই প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত কিম ও পুতিনের বুধবারের চুক্তির বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে এর আওতায় স্পেস এক্সপ্লোরেশন ও নিউক্লিয়ার এনার্জিও থাকবে বলে জানা গেছে।

চুক্তিটিকে দুই দেশের সম্পর্কের আপগ্রেড হিসেবে মনে করছেন দুই নেতা। এই চুক্তি দুই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে বলে উল্লেখ করেছেন কিম।

স্নায়ুযুদ্ধের পর এটিই মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৯৬১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি সই করেছিল। ইউনিয়নের পতনের পর চুক্তিটি ভেঙে যায়। ২০০০ সালে আরো একটি চুক্তি করা হলেও সেটি তেমনভাবে কার্যকর হয়নি।

২০০০ সালের পর এই প্রথম পিয়ংইয়ং সফরে গেলেন পুতিন। তার এই সফরের দিকে চোখ রাখছে আমেরিকা ও মিত্র দেশগুলো। কিম-পুতিনের বৈঠকটি পশ্চিমের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বছরখানেক আগে থেকেই পশ্চিমারা অভিযোগ করে আসছিল, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার এবং গোলাবারুদ ব্যবহার করছে। শুধু তাই নয়, উত্তর কোরিয়ার ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্রও রাশিয়া ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। তবে সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন দুই নেতা। কারণ উত্তর কোরিয়াকে সামরিক সাহায্যের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাশিয়াও তা ভাঙতে পারবে না।

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ৫০ লাখ গোলা পাঠিয়েছে বলে দাবি করছেন কূটনীতিকদের অনেকে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিন ওয়ানসিকের দাবি, তার দেশ অন্তত ১০ হাজার শিপিং কন্টেইনার উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার দিকে যেতে দেখেছে। এগুলো গোলা বহন করছিল বলেই মনে করেন তিনি।

অস্ট্রিয়ার এক সামরিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে গত বছরে ১০ লাখ গোলা দেওয়ার কথা ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর। কিন্তু তারা তার অর্ধেকও দিতে পারেনি। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়া তার তিনগুণেরও বেশি গোলা আনিয়ে নিয়েছে।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, উত্তর কোরিয়া শ্রমিক পাঠিয়েও সাহায্য করছে। ইউক্রেনের যেসব এলাকা রাশিয়া নতুন করে দখল করছে , সেখানে শ্রমিক পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। কারণ, রাশিয়ার অধিকাংশ শ্রমিক এখন যুদ্ধক্ষেত্রে। রাশিয়ার জন্য এটি একটি বড় সাহায্য। পাশাপাশি প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে থেকেছে উত্তর কোরিয়া।
কিম ও পুতিনের আগ্রাসন নীতি চলমান থাকলে শেষ পর্যন্ত তার ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা এখন দেখার বিষয়।

 

এশিয়ান ভিউজ/ অর্জিতা, দিবস, ফাইরোজ, রাকিব

মোট 25 বার দেখা হয়েছে, আজ 1 বার
Scroll to Top